রুপপুর প্রকল্পে অর্থআত্মসাৎ এর অভিযোগ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর- রুশ রাষ্ট্রদূত মান্টিটস্কি
রাজশাহী বিভাগ
পাবনা জেলা
প্রকাশঃ 2024-08-28 18:07:39 |
শেয়ার করুনঃ Facebook |
Twitter |
Whatsapp |
Linkedin ।
দেখা হয়েছে 82 বার।
-সঞ্জু রায়:
বাংলাদেশের নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটক্সি বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রাশিয়া-বাংলাদেশ জ্বালানি সহযোগিতার একটি প্রধান প্রকল্প। আর এই প্রকল্পে কথিত অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে বাংলাদেশী মিডিয়ায় প্রচারিত সাম্প্রতিক সংবাদগুলোতে তিনি চরম হতাশা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেন রুশ রাষ্ট্রদূত। তিনি রাশিয়া ও বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে সকল ক্ষেত্রে একসাথে কাজ চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে রাশিয়ান দূতাবাসে "নিউ টুলস ফর নিউজরুম: এক্সপ্লোরিং দ্য বেনিফিটস এন্ড চ্যালেঞ্জেস অফ এআই টেকনোলজিস" বিষয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কশপের সমাপনী অনুষ্ঠানে সম্প্রতি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে চলা আলোচনা সমালোচনার এই জবাব দেন রুশ রাষ্ট্রদূত মান্টিটস্কি। অনুষ্ঠানে মান্টিটস্কি রুপপুর ইস্যুতে আরো বলেন, ক্রয় পদ্ধতিতে কর্পোরেশনের স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতিবিরোধী নীতির আনুগত্য নিয়মিত বহিরাগত নিরীক্ষা দ্বারা নিশ্চিত করা হয়। তবুও এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যেকোনও প্রকল্পের ব্যয় একটি বাণিজ্যিক গোপনীয়তা এবং রোসাটম বা এর অংশীদাররা এই তথ্যটি প্রকাশ করে না।
বর্তমান অস্থিরতার পরও রূপপুর এনপিপির নির্মাণকাজ বন্ধ হয়নি। এই বছরের শেষের দিকে তারা ইউনিট ১ চুল্লির ফিজিক্যাল স্টার্ট-আপ কার্যকর করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানান তিনি। পাশাপাশি রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ইতিমধ্যেই অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাথে তার বৈঠক হয়েছে। যেখানে দু-দেশের সম্পর্ককে আরো জোরালো করার বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনায় উঠে আসে। তিনি বলেন, জ্বালানি ও কৃষি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার মূল ক্ষেত্র হিসেবে রয়ে গেছে। বাংলাদেশের গম ও সারের প্রধান উৎস হিসেবে রাশিয়া তার খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রেখে আসছে। গ্যাজপ্রম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এখানে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। রাশিয়ান কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে অপরিশোধিত তেল এবং এলএনজি রপ্তানি করতে, স্থানীয় সৌর শক্তির বাজার অনুসন্ধান করতে প্রস্তুত। এছাড়াও রাশিয়া পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতার নতুন উপায় আনলক করতে আগ্রহী। তাদের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশী অংশীদারদের পরিবহন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ওষুধ, কৃষি, স্মার্ট শহর এবং জননিরাপত্তা সহ একাধিক ক্ষেত্রে প্রযোজ্য উচ্চ-প্রযুক্তি সমাধান প্রদান করতে প্রস্তুত রয়েছে। এর মাঝে যারা রূপপুর এনপিপিতে কথিত অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে ভুয়া খবর লেখে এবং ছড়িয়ে দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বহুল প্রত্যাশিত প্রকল্পটিকে অসম্মান করার চেষ্টা করছে তারা প্রকৃত অর্থে দুটি বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমাগত বিকাশমান এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী সম্পর্ককে দুর্বল করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
রাশিয়ান দূতাবাসের প্রেস এট্যাচি ইভজিনিয়া কোনারেভার সঞ্চালনায় সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় মস্কো থেকে ভার্চুয়ালি এআই টেকনোলজি নিয়ে আলোচনা করেন স্পুটনিক নিউজ এজেন্সি এন্ড রেডিও"র প্রকল্প পরিচালক মিখাইল কোনার্ড। এছাড়াও স্পুটনিক নিয়ে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মস্কো থেকে বিভিন্ন বিষয়ে অবগত করেন ডারিয়া নাগোভিটসিনা।
কর্মশালায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে কিভাবে গণমাধ্যমকর্মীরা নিউজরুমে একটি মানসম্মত সংবাদ কিংবা ভিডিও প্রতিবেদন তৈরিতে সময় বাঁচাতে পারে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পাশাপাশি এআইয়ের বিভিন্ন কার্যকরী টুলস সম্পর্কে সকলকে অবগত করা হয়। কিভাবে একটি অন্য ভাষার ভিডিও প্রতিবেদন দ্রুততম সময়ে ভাষা পরিবর্তনের পাশাপাশি সাবটাইটেল এবং ভিডিওতে লোগো বসানো সম্ভব তা নিয়ে আলোচনা করা হয় কর্মশালায়। প্রায় ২০ জনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই যুগোপযোগী কর্মশালার সমাপনীতে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটক্সি।