শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত গড়াই নদীতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। ভাঙনে নদী পাড়ের মানুষ তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।এরই মধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে বেড়িবাঁধ, বসতভিটা, কৃষি জমি ও পাকা স্থাপনা।
প্রতিবছর পানি বৃদ্ধি ও কমার সাথে সাথে নদী ভাঙন দেখা দিলেও এবছরের চিত্র পুরোটাই ভিন্ন।ভাঙনের তীব্রতায় ভেঙে গেছে নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা, কোনাগ্রাম, জামসাপুর, নারুয়া খেয়াঘাট হয়ে জঙ্গল ইউনিয়নের সমাধিনগর বেড়িবাঁধ।
গত এক সপ্তাহের ভাঙনে বেড়িবাঁধ, কয়েক শ বাড়িঘর, রাস্তা, গাছপালা ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে বেশি ভাঙনের কবলে পড়েছে নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা ও জঙ্গল ইউনিয়নের সমাধিনগর, আগ-পটোরা, পুষ-আমলা গ্রামের বেশ কিছু এলাকা।
সরেজমিন দেখা যায়, গড়াই নদীর ভাঙনে নারুয়ার মরাবিলা গ্রামের উপর দিয়ে যাতায়াতের পাকা রাস্তার ৫০০ মিনিট অংশ ভেঙে গিয়েছে। এলাকা বাসি বলেন গত তিন বছর যাবত একের পর এক নদীর পার ভেঙে চলেছে, এখন যে অবস্থায় আছে তাতে নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে চর-ঘিকমলার মাঠে পানি ঢুকে যাবে।বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে মুরিকাটা পেয়াজ, রসুনের আবাদি জমি দিয়ে চলাচল করছে মানুষ ও যানবাহন।
অপরদিকে নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা গ্রামের বেশ কিছু বসতভিটা ও কৃষি আবাদী জমি কয়েকদিন আগে নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে। অনেকে নিজেদের রক্ষার জন্য ঘর-বাড়ী ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে।
মরাবিলা বাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি বছর গড়াই নদীর পাড় ভাঙে। সরকার ভাঙন রোধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না।
অন্যদিকে জঙ্গল ইউনিয়ন বাসী বলেন, ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড নামমাত্র কিছু জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রক্ষার চেষ্টা করে। তাদের অভিযোগ এতে করে সরকারের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। যা লোপাট করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
নদী ভাঙন কবলিত মরাবিলা গ্রামের চঞ্চল বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। বর্তমানে নদী পাড়ের শত শত স্থানে বড় আকারের ফাটল দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে গড়াই নদীর আধা কিলোমিটার অংশ ভেঙে গিয়েছে। এখন আর আমার বসতবাড়ীতে থাকা সম্ভব নয়।
তিনি আরো বলেন, আমার জন্মের পর থেকে আজ অব্দি দেখলাম না পানি উন্নয়ন বোড কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করলো। এমনকি জনপ্রতিনিধিদের ও দেখা মেলে না।
মরাবিলা বাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গুরুত্বপূূর্ণ ভাঙন কবলিত স্থান চিহৃ্িত করে জঙ্গল ইউনিয়নে ভাঙনরোধে এক কোটি সতের লাখ টাকার চাহিদা দেওয়া হয়েছে কিন্তু মরাবিলা গ্রাম নদীগর্ভে বিলীনের পথে সেদিকে কোন নজর নাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের ।
নারুয়া ইউনিয়ন বাসীর দাবী মরাবিলা থেকে যে ভাঙন শুরু হয়েছে তা পরিদর্শন করে অতিসত্তে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।