নড়াইল প্রতিনিধিঃ
আজ ১০ ডিসেম্বর, নড়াইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিন নড়াইল রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে এক সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে নড়াইল শত্রæ মুক্ত হয়। দিনটি উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন সীমিতভাবে কয়েকটি কর্মসূচি গ্রহন করেছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহরের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ, নড়াইল জজ আদালতের পশ্চিম পার্শ্বে চিত্রা নদীর তীরে অবস্থিত বধ্যভূমি, পুরাতন বাস টার্মিনালের বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের অভ্যন্তরে গণকবরে পুস্পমাল্য অর্পণ এবং মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে স্মৃতিচারণ।
জানা গেছে, নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত তৎকালিন ওয়াপদা ডাক বাংলায়(বর্তমান পানি উন্নয়ন বোর্ড) পাকিস্তানি মিলিশিয়া ও রাজাকার বাহিনীর সবচেয়ে বড় ক্যাম্প ছিল। ৮ ডিসেম্বর নড়াইল মহকুমার লোহাগড়া থানা শত্রæ মুক্ত হয় এবং কালিয়া থানাও মুক্তির দ্বারপ্রান্তে। ৭ডিসেম্বর রাজাকারদের কুট কৌশলে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্র ও মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রাজাকারদের হাতে নিহত হয়। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষিপ্ত হয়ে ৯ তারিখ দুপুরে রূপগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে অবস্থানরত পাকিস্তানি রিজার্ভ ফোর্স, পুলিশ ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বন্দুকযুদ্ধ সংঘটিত হয়। কয়েক ঘন্টাব্যাপি চলা এ যুদ্ধে পাক বাহিনী ও রাজাকাররা পরাস্থ হলেও সদরের বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা আরও সংগঠিত হয়ে ১০ ডিসেম্বর ভোর ৪টা থেকে রূপগঞ্জ জামে মসজিদ এলাকা, বর্তমান উৎসব কমিউনিটি সেন্টার এলাকা এবং মালেক মোল্লার দোতলায় মুক্তিযোদ্ধাদের ৩টি গ্রæপ রূপগঞ্জ ওয়াপদায় পাকিস্তানি ও রাজাকার বাহিনীর ওপর গুলি বর্ষণ শুরু করে। দু’পক্ষের মধ্যে টানা ৭ঘন্টা ব্যাপক গুলি বিনিময় চলার পর বেলা ১১টার দিকে পাকিস্তানি ও রাজাকার বাহিনী আতœসমর্পন করে। এ সময় পাক অধিনায়ক অধিনায়ক বেলুচ কালা খান ২২ পাক সেনা ৪৫ জন রাজাকার ও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ মক্তিযোদ্ধাদের কাছে আতœসমর্পণ করে। শত্রæমুক্ত হয় নড়াইল।